04/16/2025 আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৭ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক
তানজিমুর রহমান
৮ জুন ২০২২ ১৩:০৪
আগামী অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক।
মঙ্গলবার প্রকাশিত সংস্থার গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
এর আগে জানুয়ারিতে একই অর্থবছরের জন্য ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয় বিশ্বব্যাংক।
মূল্যস্ফীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে সেটি কমিয়ে এনেছে সংস্থাটি।
জানা যায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সে হিসাবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসের সঙ্গে বিস্তর ব্যবধান থাকছে সরকারের লক্ষ্যমাত্রায়।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি অর্থবছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৪ শতাংশে। এটিও সরকারি হিসাবের তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাবে, চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খানিকটা বাড়বে। দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি এবং সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ তেলসমৃদ্ধ আরব দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ায় সেখান থেকে রেমিট্যান্স আসা বেড়ে যাওয়াই এর কারণ বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিমারি করোনার প্রভাব থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হয়েছে বাংলাদেশে। এটি চলতি অর্থবছরে ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি আয়ে ২৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শিল্প উৎপাদনও বেশ দ্রুতগতিতে বেড়েছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ওপর প্রভাব পড়াসহ অর্থনীতিতে নানা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়া প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের দেশগুলোর জ্বালানি তেল ব্যাপকভাবে আমদানিনির্ভর। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক দেশে এ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এটি তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমস্যায় ফেলবে। পাশাপাশি রাজস্ব ভারসাম্যহীনতাও তৈরি করতে পারে। সরকারের ব্যয়ের অনুপাতে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি সবেচেয়ে বেশি বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানে। জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য এবং অনিশ্চিত বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এ অঞ্চলের দেশগুলোতে মূল্যস্ম্ফীতির চাপ বাড়তে পারে। এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি বাড়াতে পারে দারিদ্র্যের হার। এর ফলে উৎপাদন সহায়ক সরকারি বিনিয়োগ ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে দেওয়া বাজেটের অর্থ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ারও প্রয়োজন পড়তে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক অবস্থা সবচেয়ে খারাপ শ্রীলঙ্কার। এ ছাড়া মানবিক সংকটে রয়েছে আফগানিস্তান।
সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অনেকটা কমিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাংক।
সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা গত জানুয়ারিতে দেওয়া পূর্বাভাসের চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ কম।