520

04/19/2025 জামালপুরের ৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার হাট

জামালপুরের ৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ জুলাই ২০২২ ০৫:৪৫

বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকেই জামালপুর সদর উপজেলার তুলসীপুরে বসতে শুরু করে বিরাট আকারের ঘোড়ার হাট। সপ্তাহের বৃহস্পতিবারের এ হাটে আমদানি হয় শতাধিক ঘোড়া। ঘোড়ার পাশাপাশি এখানে বেচাকেনা হয় ঘোড়াগাড়ি ও লাগামসহ নানা সরঞ্জাম। 

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাল, সাদাসহ নানা রংয়ের ঘোড়া ও ঘোড়ার বাচ্চা নিয়ে এ বাজারে আসেন মালিক ও ঘোড়সোওয়াররা। জানা গেছে, শেরপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, বগুড়া , কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, নড়াইল ও  কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকার ও ঘোড়সওয়ার এ হাট থেকে ট্রায়াল দিয়ে পছন্দের ঘোড়াটি কিনে নেন। বিশেষ করে তরুণ ঘোড়সওয়াররা শখের ঘোড় দৌড় প্রতিযোগীতার জন্য চড়া দামে কিনে নেন আকর্ষণীয় ত্যাজি ঘোড়া ।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম জানান- দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত চলা এই ঘোড়ার হাটে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকার ঘোড়া বিক্রি হয় এহাটে। দেশের নানা জায়গা থেকে এমনকি কখনো বিভিন্ন প্রবাসীরাও ভিডিও কলের মাধ্যমে এই হাট থেকে ঘোড়া কিনে থাকে। এই হাটে ঘোড়া ছাড়াও ৩  থেকে ৭ হাজার টাকায় ঘোড়ার গাড়িও বিক্রি করা হয় । 

টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার ঘোড়া ব্যবসায়ী মো. রফিকুল  আমিন বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত এই বাজারে অনেক ভালো ভালো ঘোড়া পাওয়া যায়। দেশের অন্য কোনো জায়গায় আমি এমন ঘোড়ার হাট নাই। এই হাটে দেশি, তাজী, ভুইটা, ক্রস এমনকি গাধা সাইজের ঘোড়াও এই হাটে বিক্রি করা হয়ে থাকে।

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা থেকে আসা ঘোড়া ক্রেতা  বেলাল হোসেন বলেন, আমি সিরাজগঞ্জ থেকে আইছি ২৫ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়া কিনছি। এহন এই রাইতের বেলা আমার সিরাজগঞ্জ যাওয়া লাগবো। যদি থাকার এডা জায়গা থাকতো । তাইলে রাইতটে থাইকে কাইলকে সকালে যাইতাম। এহন কষ্ট হইলেও রাইতের বেলায় বাড়িত যাওন লাগবো।

ঘোড়া ব্যবসায়ী জুয়েল রানা বলেন-এই ঘোড়ার হাটে ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা নিয়ে ঘোড়া কিনতে আসে। তাদের একটা নিরাপত্তার প্রশ্ন আছে। এই জায়গায় কোনো নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নাই। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসে। তাদের থাকা খাওয়া এমনকি বসার কোনো জায়গা নাই। এসব কারনে দিন দিন ঘোড়া বিক্রি কমে যাচ্ছে। তাই এসব বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।

ঘোড়ার হাটের ইজাড়াদারের একজন মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস বলেন- মৌসুমে এই হাটে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘোড়া বেচা কেনা হয়ছে। এখন তেমন একটা বেচা কেনা নাই। সামনে বেচা কেনা বাড়তে পারে। তবে এই হাটে যদি উপজেলা প্রশাসন ক্রেতাদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে আরো ভালো বিক্রি হতো।

এ বিষয়ে জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান বলেন, ঘোড়া ব্যবসায়ী বা ইজাড়াদার কেউ এখন পর্যন্ত এসব বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেনি। তবুও তাদের সাথে কথা বলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ঘোড়ার হাটকে আরও সমৃদ্ধ করতে উপজেলা প্রশাসন সবসময় তৎপর। 

সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
যোগাযোগ: বাড়ি # ৫৩, রোড # ৩, জার্নালিস্ট আর/এ, কালশি মিরপুর-১২, ঢাকা - ১২১৬
মোবাইল: +৮৮ ০১৬৭৩ ৩৮৮ ৭১৫
ইমেইল: all.mamun100@gmail.com