হঠাৎ করে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘বিকল্প থাকা সত্ত্বেও ডিজেল, পেট্রল, অকটেনের দাম বাড়িয়েছে সরকার’।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ নিজের প্রোফাইল ও পেজে করা এক পোস্টে এ প্রতিক্রিয়া জানান।
উল্লেখ্য, কোনো ধরনের গণশুনানি, পূর্বালোচনা ছাড়াই শুক্রবার রাতে হঠাৎ ঘোষণায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার।
ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। শনিবার ভোররাত ১২টা থেকে এই নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘সরকার যেন বারবার প্রমাণ করতে চায় জনগণের দুর্ভোগ আর অর্থনীতির শৃঙ্খল বাড়াতেই তার বেশি আগ্রহ এবং আনন্দ। নইলে অনেক ভালো বিকল্প থাকা সত্ত্বেও কীভাবে মাত্র কয়েক মাসের মাথায় এইরকম উচ্চ হারে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন-এর দাম বাড়ায়? সরকার একটা ভাঙা যুক্তি দেবে- বিশ্ববাজারে এসব তেলের দাম বেড়েছে তাই বাধ্য হয়ে বাড়াতে হচ্ছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘কথাটা বিভিন্ন দিক থেকে ভুল। প্রথমত, এখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী না, বরং নিম্নমুখী। দ্রুত তেলের দাম কমে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এর আগে বিশ্ববাজারে তেলের দাম যখন অনেক কম ছিল তখন সরকার কয় বছরে লাভ করেছিল ৪৭ হাজার কোটি টাকা, গত কিছুদিনে যে লোকসান হয়েছে তার তুলনায় এই লাভ কয়েকগুণ বেশি। তার মানে সরকার জনস্বার্থ ও অর্থনীতির কথা চিন্তা করলে লাভের টাকার একাংশ দিয়েই এই লোকসান ঠেকাতে পারত। তৃতীয়ত, দাম বাড়ালে যে ভয়াবহ পরিণতি হয় তার কথা চিন্তা করে বহু দেশেই তেল আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করে দাম কম রাখতে চেষ্টা করছে। সরকার সেটাও করে নাই। চতুর্থত, প্রধানমন্ত্রী তো কয়দিন আগেই আমাদের জানিয়েছিলেন, অকটেন, পেট্রল আমাদের কিনতে হয় না, দেশেই উদ্বৃত্ত হয়। তাহলে?’
তিনি লিখেছেন, ‘জনগণের জীবন দুর্বিষহ করে, অর্থনীতিকে বিপদগ্রস্ত করে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে ডিজেল, অকটেন, পেট্রলের দাম বাড়ানোর পেছনে তাই সরকারের লোকজনদের লুটপাটে শতচ্ছিন্ন ছালা ভরা ছাড়া আর কোনো যুক্তি পাওয়া যায় না। সরকার মনে করে, স্বৈরতন্ত্রী দাপটে তারা যা খুশি তাই করতে পারে!’