634

04/19/2025 এখনো ‘বিচ্ছিন্ন’ আফগানিস্তানে খাদ্য সংকট প্রকট

এখনো ‘বিচ্ছিন্ন’ আফগানিস্তানে খাদ্য সংকট প্রকট

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৬ আগস্ট ২০২২ ১৫:৩৯

তীব্র খাদ্য সংকট ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে গতকাল সোমবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের বর্ষপূতি উদযাপন করে তালেবান। গোটা বাইরের বিশ্ব থেকে কূটনৈতিকভাবে এখনো কার্যত বিচ্ছিন্ন তারা। ক্রমবর্ধমান সংকটের কোনো সুরাহা দেখা যাচ্ছে না। নারীদের শিক্ষা ও কাজের অধিকার দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তানের ক্ষমতার দৃশ্যপটে তালেবানের পুনরুত্থানের এক বছরে সংকট গভীর হয়েছে। তবে এসব সংকট এড়িয়ে গিয়ে তালেবান যোদ্ধা ও সমর্থকরা দেশ থেকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ বিদেশি শক্তির বিদায়কে প্রধান বিষয়বস্তু হিসেবে তুলে ধরছেন।

জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের অর্ধেক জনগণ ক্ষুধার তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) গত মে মাসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের ৪৩ শতাংশ মানুষ দিনে এক বেলারও কম খাবার খায়। দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ তাদের প্রাথমিক চাহিদা হিসেবে খাদ্যের কথা উল্লেখ করছে।

আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অবরোধের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯০০ কোটি ডলার অর্থ জব্দ হয়ে রয়েছে। বিদেশি সহায়তাও বন্ধ রয়েছে, যা দেশটির বার্ষিক বাজেটের ৮০ শতাংশ পূরণ করত। মূলত ক্ষমতা দখলের পর কড়া শরিয়া আইন আবারও বলবত্ করা এবং নারী ও মানবাধিকার সংকুচিত করার অভিযোগের পশ্চিমা দেশগুলো তালেবানকে সহায়তা দিচ্ছে না।

গত এক বছরে অবস্থার কোনো পরিবর্তন না করে কট্টর নীতিগুলোই ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করছে তালেবান। গত মে মাসে নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গত শনিবার ‘রুটি, কাপড় ও কর্মসংস্থানের’ দাবিতে নারীদের একটি মিছিলে ফাঁকা গুলি ছোড়ে তালেবান। মাধ্যমিক স্তরে নারীশিক্ষা আবারও শুরু করতে স্কুল খোলার বিষয়ে তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং গত জুন মাসের শেষ নাগাদ নারীশিক্ষা প্রশ্নে তালেবানের শীর্ষনেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আন্তর্জাতিক চাপকে উপেক্ষা করে জানিয়ে দেন, আফগানিস্তান তার ‘নিজস্ব নীতিতে’ চলবে।

আফগানিস্তানের নারীদের কাজের অধিকার কেড়ে নেওয়া শুরু হয় গত বছরের আগস্ট থেকেই। তখন থেকে বেসামরিক প্রশাসনের নারী কর্মীদের বলা হচ্ছে, তাঁরা যেন নিজেদের চাকরি নিকটাত্মীয়কে দিয়ে দেন। দেশটির একজন নারী বলেন, ‘তারা (তালেবান) আমার চাকরিটি আমার ভাইকে দিয়ে দেওয়ার কথা বলছে। ’ ওই নারী আরো বলেন, ‘অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার সঙ্গে এই জায়গা আমরা অর্জন করেছি; তাদের আহ্বানে সাড়া দিলে তা নিজেদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে। ’

তালেবান কর্তৃপক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশই তাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংখ্যালঘু ও নারীদের আরো প্রান্তিকীকরণ করাই এর প্রধান কারণ।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটের সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া চলতে থাকার মধ্যে গত বছরের ১৫ আগস্ট তালেবান যোদ্ধারা ঝড়ের বেগে রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করে। ওই সময় দেশ ছেড়ে পালান পশ্চিমা মদদপুষ্ট প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। ক্ষমতা দখল করে তালেবান জানায়, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের আগের দফা শাসনামলের কট্টর অনুশাসন থেকে সরে আসবে তারা। কিন্তু সেই অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন দৃশ্যমান হয়নি।

এ অবস্থার মধ্যে গতকাল তালেবান যোদ্ধা ও সমর্থকরা বিজয় উদযাপন করেছে। রাজধানী কাবুলে রাজপথে তালেবান যোদ্ধারা নানাভাবে উল্লাস প্রকাশ করেন। সূত্র : বিবিসি, সিএনএন

 
সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
যোগাযোগ: বাড়ি # ৫৩, রোড # ৩, জার্নালিস্ট আর/এ, কালশি মিরপুর-১২, ঢাকা - ১২১৬
মোবাইল: +৮৮ ০১৬৭৩ ৩৮৮ ৭১৫
ইমেইল: all.mamun100@gmail.com