ঢাকা | বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

‘পুলিশ হেফাজতে’ তরুণের মৃত্যু, আদালতে পরিবার

তানজিমুর রহমান | প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২২ ০৫:২৫

সুমন শেখের স্ত্রী জান্নাত আক্তারের আহাজারি। ফাইল ছবি

রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় পুলিশ হেফাজতে সুমন শেখ নামে তরুণের ‘মৃত্যুর’ ঘটনায় মামলা করতে আদালতের দারস্থ হয়েছে তার পরিবার।

রোববার সুমনের স্ত্রী জান্নাত বেগমের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম মোশাররফ গণমাধ্যমকে বলেন, সুমনের মৃত্যুর ঘটনায় ‘ন্যায়বিচার’ পেতে তারা আদালতের দারস্থ হয়েছেন।

মোশাররফ আরও বলেন, ‘আমরা লাশ গ্রহণ করিনি, আদালতে এসেছি বিচার চাইতে। লাশ নেওয়ার বিষয়ে আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেব, আগে আদালতের কাজ শেষ হোক।’

পুলিশের দাবি, চুরির অভিযোগে গ্রেফতার সুমন শুক্রবার মাঝরাতের পর হাজতে ‘গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা’ করেন। এর একটি সিসিটিভি ভিডিও স্বজনদের দেখানো হয়েছে।

তবে সুমনের পরিবারের দাবি, ‘গ্রেফতারের পর সুমনকে থানায় মারধর করা হয়েছে। পুলিশের দেখানো সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে সুমনের লাশ বা ঝুলন্ত দেহ ছিল না। তার বিরুদ্ধে আনা চুরির অভিযোগও সঠিক নয়।’

হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ময়নাতদন্তের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুমনের লাশ পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু আমরা লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে পারিনি।তারা (সুমনের পরিবার) আদালতে যাওয়ার কথা বলেছেন।’

এর আগে গতকাল (শনিবার) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের ডিসি আজিমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, অভিযান শেষে সুমন শেখকে রাতে হাতিরঝিল থানায় রাখায়। আজ (শনিবার) সকালে রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে হাজির করার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার রাত ৩টা ৩২ মিনিটে সুমন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে গলায় ফাঁস দেন, যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এই ফুটেজ সুমনের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে বলে জানান ডিসি।

ডিসি জানান, হাতিরঝিল থানায় সুমন শেখ নামের এক আসামির আত্মহত্যার ঘটনায় শুক্রবার রাতে দায়িত্বে থাকা ডিউটি অফিসার হেমায়েত হোসেন ও সেন্ট্রি মো. জাকারিয়াকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সুমনের স্ত্রী জান্নাত আরা জানান, সুমন রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেখানে চুরির অভিযোগে তাকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাতে থানায় আনার সময় সুমনকে মারধর করেছে পুলিশ। এরপর থানা হাজতে নির্যাতনের সময় সুমনের মৃত্যু হয়। 

সুমনের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্বামীরে ওরা থানার ভেতর মেরে ফেলছে। অফিসে ওরে মারছে। রাতে পুলিশ গিয়ে নিয়ে আসছে। পুলিশও মারতে মারতে আনছে। রাতে আমি থানায় দেখতে আসছিলাম, আমারে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বের করে দিছে।’

এদিকে সুমনের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার বিকালে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। বিকালেই সুমনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by DATA Envelope
Top