ঢাকা | বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

আমি, ডামি ও স্বামীর সংসদ বাতিল করতে হবে : নজরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০২৪ ০৩:১৩

বিএনপির কালো পতাকা মিছিল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আগে বলা হতো বিনা ভোটের সরকার। কারণ ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। ২০১৮ সালে হলো নিশি রাতের নির্বাচন, কারণ রাত্রিবেলা ব্যালট বাক্স ভর্তি। আর এবার সরকারকে সারা দুনিয়া বলছে, এটা ডামি সরকার। কেউ বলে, আমি, ডামি ও স্বামী।
তিনি বলেছেন, ‘স্বামী বলে কেন জানেন তো। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলছিলেন, আমাদের দেশের সাথে ভারতের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। ডামি সরকার কী আসল সরকার হয়? এই সরকারের টিকা উচিত নয়। কারণ এই সরকারকে জনগণ ভোট দেয়নি। তাই আমি, ডামি ও স্বামীর সংসদ বাতিল করতে হবে।’
শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের কাজীর দেউরী নুর আহমদ সড়কে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও অবৈধ সংসদ বাতিলের একদফা দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে কেন্দ্র ঘোষিত এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই তথাকথিত নির্বাচনী খেলার আগে অল্প কিছু দিনের মধ্যে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১৫ শ’র বেশি নেতাকর্মীকে সাজা দেয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাদেরকে দণ্ড দেয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নাকি কাকতালীয়। এটি আপনাকে আমাকে ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে। কিন্তু আমরা ভয় পাইনি। ওঠাতো ছোট জেল, এই সরকার গোটা বাংলাদেশকে কারাগার বানিয়ে রেখেছে। বিএনপির কোনো কর্মী ওই ছোট কারগারকে ভয় পায় না।’তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বেলা ৫টায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশ। পাশে থেকে একজন বললেন, না স্যার ৪০ শতাংশ। পরে তিনি বললেন, ৪০ শতাংশ। প্রতিনিধিরা জিজ্ঞেস করলেন, আপনি একবার বললেন ২৮ আবার বললেন ৪০, ব্যাপারটা কী? তখন বলেন, আমি তো ২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, বুঝতে পারিনি; পরে সহকর্মীরা মনে করিয়ে দিয়েছে। ভাবেন একবার, দেশে একটা জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমাচ্ছে। এটা স্বাভাবিক। ফলাফল তো ঠিক করাই আছে, কত কেন্দ্রে কে কত ভোট পাবে, বিরোধী দল নির্বাচন করেনি, নির্বাচন কমিশনার ঘুমাইতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ভোট ডাকাত এই সরকারের কাছে জনগণের কোনো মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।’সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যায়নি, শিশুরা ভোট দিয়েছে। আগের নির্বাচনে কুকুর দেখা গিয়েছিল, এবারের নির্বাচনে বানর দেখা গেছে। ওই যে বানরের পিটা ভাগাভাগি নির্বাচন। পিঠার ভাগ নেয়ার জন্য বানর কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিল। এই নির্বাচন ৯৫ ভাগ মানুষ বয়কট করেছে। এই নির্বাচনে দলীয় সন্ত্রাসীরা ৬০ সেকেন্ডে ৬০টি ভোট দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছে। তাই তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। রাজপথে আছি, আন্দোলন চলতে থাকবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস ও আসলাম চৌধুরীসহ নেতাকর্মীদেরকে মুক্ত করে আনব।’

নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে কালো পতাকা নিয়ে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে লাভ লেইন, এনায়েত বাজার, জুবলী রোড় হয়ে তিন পুলের মাথায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিল শেষ করে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by DATA Envelope
Top