ঢাকা | বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

মামলার পর ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল, তরুণীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২২ ১০:৪৩

ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়েরের ৪ দিন পর ভাইরাল করা হয় ধর্ষণের ভিডিও। এতে ক্ষোভে অপমানে রূপা (২২) নামের এক তরুণী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

সোমবার বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বালিয়াগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

রূপা বালিয়াগাঁও গ্রামের দিনমজুর রওশন জামিল ওরফে বিষু মিয়ার মেয়ে বলে জানা গেছে।

ঘটনার খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসিন ও মদনগঞ্জ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মহসিন ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি সুরাহা করার আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করায় কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মোমেন ওরফে কচি মেম্বারকে সোমবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এলাকাবাসী জানান, ২ বছর আগে বন্দর উপজেলার বালিয়াগাঁও এলাকার মৃত জামির খানের ছেলে নুরুল আমিন একই এলাকার দিনমজুর রওশন জামিল ওরফে বিষু মিয়ার মেয়ে রূপার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নুরুল আমিন ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

গত ২২ মে তরুণীর বাবা-মা কাজে চলে গেলে এ সময় নুরুল আমিন বাড়িতে তাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক আবারো ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পর বিয়ের জন্য চাপ দিলে নূরুল আমিন বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।

এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে গত ২ জুন নূরুল আমিনকে আসামি করে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে মর্জিনা বেগম জানান, আমি গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করি। আমার স্বামীও দিনমজুর। আমরা কাজে গেলে ওই সুযোগে নূরুল আমিন আমাদের ঘরে আসে। পরে আমার মেয়েকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকার ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে ৪ দিন আগে নূরুল আমিনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি। থানায় মামলা করার জের ধরে নূরুল আমিনের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও একই এলাকার তাওলাদ হোসেনের ছেলে ও নূরুল আমিনের ভাগ্নে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইব্রাহিম রোববার মেয়েকে ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল করে।

তিনি জানান, ঘটনার সুরাহা করে দেওয়ার নাম করে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য  কচি মেম্বার টালবাহানা করে।  এ সব ঘটনায় রুপা সোমবার সকাল ১০টায় ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এ ব্যাপারে বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসিন  বলেন, এলাকাবাসীর মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমি ও মদনগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হই। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

তিনি বলেন, ওই তরুণী আত্মহত্যা করার পর থেকে ধর্ষক নূরুল আমিন ও অশ্লীল ভিডিও ভাইরালকারী ধর্ষকের স্ত্রী শ্যামলী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইব্রাহিম পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by DATA Envelope
Top