সিতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ
দগ্ধ ছেলেকে দেখতে যাওয়ার টাকা ছিল না বাবার কাছে
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২২ ০৯:১১

অবশেষে দন্ধ ছেলের দেখা পেয়েছেন বাবা ও স্বজনরা। চট্রগ্রামে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনে আল আমিনের দগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে তার পরিবার টাকার অভাবে চট্রগ্রামে যেতে পারছেন না বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় আল আমিনের বাবা দিনমজুর সিফু মিয়া (৫৫) ও আত্মীয় আব্দুল সালাম সোমবার বিকেলে চট্রগ্রাম চকবাজার হাসপাতালে গিয়ে ছেলের পোড়া শরীর দেখতে পান।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের বাগেরখাল গ্রামের বাসিন্দা সিফু মিয়ার সাত ছেলের মধ্যে আল আমিন (২১) দ্বিতীয়। প্রায় এক মাস আগে রুটি-রুজির আশায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে শ্রমিকের কাজ নেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই আল-আমিন নিখোঁজ ছিলেন। রোববার রাতে স্থানীয় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দগ্ধ অবস্থায় আল আমিনকে দেখতে পান। ভিডিওটি আল আমিনের মা সুজেনা বেগমের কাছে নিয়ে গেলে তিনি নিজের ছেলে বলে শনাক্ত করেন। ছেলের করুণ দশা দেখে পরিবারে শুরু হয় আহাজারি।
আল আমিনের বাবা সেফু মিয়া বলেন, আগুন লাগার পরপরই আল আমিন তার চাচা ফজলু মিয়ার ফোনে কল দিয়েছিল। তবে কিছুক্ষণ পরে ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি। অর্থের অভাবে ছেলেকে দেখতে চট্রগ্রামে যেতে পারছি না এ খবর পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মুদ্দত আলীর কাছে গেলে তিনি সোমবার সকালে একটি প্রাইভেটকারে আল আমি আর তার দাদা আব্দুল সালামকে চট্রগ্রাম পাঠান।
আব্দুল সালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার রাতে আহত অবস্থায় সিএমএইচ হাসপাতালে নেয়া হয় আল আমিনকে। কিন্তু তার কোনো অভিভাবক না থাকায় সেখানে ধারাবাহিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তাকে চকবাজার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সালাম আরো জানান, চকবাজার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আল আমিনের ৯৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে আইসিসিইউতে স্থানান্তর করতে হবে। বিএম কনটেইনার ডিপোর তত্ত্বাবধানে আল আমিনকে রাত ৯টায় আগ্রবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিসিইউতে নেয়া হয়।
শনিবার (৪ জুন) রাত ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় রাসায়নিক থাকা একটি কনটেইনার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে প্রায় ৪১ জন নিহত ও দু’শতাধিক মানুষ আহত হন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: