ঢাকা | সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১

জনসাধারণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমানোর তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৯ জুন ২০২২ ১৬:৩২

জনসাধারণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমানোর তাগিদ

দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৮ শতাংশ বহন করছেন জনসাধারণ, আর সরকার বহন করছে মাত্রা ২৩ শতাংশ। এই অবস্থায় জনসাধারণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে আসন্ন জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দের ক্ষেত্রে গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সোমবার (৬ জুন) বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের যৌথ আয়োজনে ‘স্বাস্থ্য বাজেট বিষয়ক জাতীয় সংলাপ’ শিরোনামে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা। 

বক্তারা বলেন, জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে এমনভাবে বরাদ্দ দেওয়া দরকার যাতে করে মানুষের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের এই চাপ হ্রাস পায়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত, মহিলা আসন-৫০ এর সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ।

আলোচনার শুরুতে স্বাস্থ্য বাজেট বিষয়ে মূল নিবন্ধ অনলাইনে উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ে সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। সংলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের থিমেটিক গ্রুপের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

সরকারের অর্থবিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য এবং মাঠ-জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে তৈরি মূল নিবন্ধ উপস্থাপনের সময় ড. আতিউর বলেন যে, সরকারের স্বাস্থ্য বাজেটে বর্তমানে ওষুধ ও পচনশীল চিকিৎসা সামগ্রী বাবদ যে বরাদ্দ আছে তা যদি তিনগুণ করা যায় এবং যদি উপজেলা পর্যায় থেকে কমিউনিটি পর্যায় পর্যন্ত তিন ধরনের সরকারি সেবাকেন্দ্রে সব শূন্যপদে দক্ষ জনবল নিয়োগ করা যায়, তাহলে মোট স্বাস্থ্যে ব্যয়ে জনসাধারণের অংশ ৬৮ শতাংশ থেকে কমে ৫১ শতাংশ হতে পারে।

তবে মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি পুরো স্বাস্থ্যখাতেই সংস্কারে মনযোগ দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

ডা. হাবিবে মিল্লাত তার বক্তব্যে স্বাস্থ্য খাতের জন্য মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করা এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতে স্বাস্থ্য খাতের চাহিদাগুলো প্রতিফলিত করার ওপর জোর দেন।

প্রতিবেশী ভুটান যেভাবে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে এবং ভারতে নিন্মআয়ের মানুষের জন্য যে স্বাস্থ্য বিমার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশেও সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার পথে এগোনো দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন রুমিন ফারহানা।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী তার বক্তব্যে দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেবল সরকারি সেবাকেন্দ্রের ওপর না চাপিয়ে সরকার ও ব্যক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন। অন্যান্য বক্তারা স্বাস্থ্য বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, ব্যক্তিখাতে স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের মান-নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা খাতে যথাযথ মনযোগ দেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলো ধরেন।

টিআই/জেডএস

 
 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by DATA Envelope
Top