ঢাকা | বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

কারা হেফাজতে বিএনপি নেতাকর্মীর মৃত্যু : যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৩:৪২

ফাইল ফটো

গত কয়েক মাসে বিএনপির ১৩ জন নেতা-কর্মীর কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের রক্ষক বা কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠন ও ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো: আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেন।
শুনানিকালে রিট আবেদনকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘এগুলোর (ঘটনাগুলোর) মধ্যে ময়নাতদন্ত হয়েছে কয়টির? ইউডি কেস (অপমৃত্যুর মামলা) হয়েছে কি-না তথ্যগুলো দেন। সম্পূরক আকারে দিতে পারেন।’

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সাথে ছিলেন আইনজীবী মানবাধিকার আইনজীবী কায়সার কামাল ও মো: মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার সাথে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

শুনানিকালে আদালত বলেন,‘এ বিষয় নিয়ে (যে ঘটনাগুলো নিয়ে রিট) রিট চলে কি না? তখন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, রিট চলে। আদালত বলেন, এগুলোর মধ্যে ময়নাতদন্ত হয়েছে কয়টির? অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে কি না? তখন এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আরেকটি বাড়তি দায়িত্ব। তারা অপমৃত্যুর মামলা করবে না? তখন আদালত বলেন, তারা করুক বা না করুক তথ্যগুলো দেন। চাইলে সম্পূরক আকারে দিতে পারেন।’একপর্যায়ে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কে মরেছে, সাদা না কালো এটি দেখার দরকার নেই। এই ঘটনাগুলোয় সবারই লজ্জিত হওয়া উচিৎ যে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এসব বন্ধ হওয়া উচিৎ।’অপারেশন ক্লিন হার্ট’ নামে ২০০৪ সালের অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সবাই জানে যে ২০০৪ সালে অপরেশন ক্লিন হার্ট হয়েছিল। সেখানে কয়েক শ’ লোকের হার্ট ক্লিন হয়ে গিয়েছিল। ধরার পর বিকেল বেলায় হার্ট ক্লিন হয়েছে, এরপর রাতের বেলাই দাফন করা হয়েছে। তখন সরকার (তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার) এটাকে উপভোগ করেছে, আইন করেনি। ২০১৩ সালে আইন হয়েছে। আবেদনকারী পক্ষ যেগুলো বলেছে, সে বিষয়ে প্রতিকারের জন্য আইন আছে।’

২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন তুলে ধরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আবেদনকারী পক্ষের উদ্বেগ, যুক্তি বা কিছু বলার থাকলে তিনি প্রতিটি জায়গায় (যেখানে ঘটেছে) মামলা করতে পারেন। আইন তাকে এই অধিকার দিয়েছে। উনি (রিট আবেদনকারী পক্ষ) নিজেই তা করতে পারেন। উনারা (রিট আবেদনকারী পক্ষ) কী চেষ্টা করেছে রিপোর্ট আনার? উনারা মেডিক্যাল রিপোর্ট আনুক। পরে আদালত বলেন, এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হলো।কারা হেফাজতে গত কয়েক মাসে বিএনপির ১৩ জন নেতা-কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে ঘটনাগুলো তদন্তে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের রক্ষক বা কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠন ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি রিটটি করা হয়। বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল আবেদনকারী হয়ে ওই রিটটি করেন।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বিগত কয়েক মাসে ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। এসব মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট দায়ের করেছি। রিটে কারাগারে বিএনপি নেতা-কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করেছি।

এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন,‘গত তিন মাসে কারাগারে নির্যাতনে বিএনপির ১৩ নেতার মৃত্যু হয়েছে।

 

 

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by DATA Envelope
Top