বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে দোটানায় বিইআরসি
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৫৪

গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না, এমনটাই জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানোর আবেদনের বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত জানাবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম না বাড়ানোই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হবে।
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে দাম না বাড়ানোর ব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়বে কি না সেটা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেননি। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাবে বেশ কিছু অসামঞ্জস্য রয়েছে। এগুলো নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। বুধবার তারা দিনভর মিটিং করেছেন। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় আবারও বৈঠকে বসবে কমিশন। ওই বৈঠকের পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
গ্রিড বিপর্যয় আর জ্বালানি সংকটের ধাক্কায় রাজধানীসহ দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিং সাধারণ মানুষকে ভোগাচ্ছে। এমন অবস্থার মধ্যেই আবার সামনে আসছে বিদ্যুতের দামের বিষয়টি।
পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৬৬ শতাংশ বাড়াতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবেদনের ওপর গত ১৮ মে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে ওঠা বিভিন্ন পক্ষের যুক্তিতর্ক পর্যালোচনা শেষে বৃহস্পতিবার আদেশ ঘোষণা করবে কমিশন।
সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সংকটময় পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম নিয়ে নীতিনির্ধারকরা কোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতি চান না।
এদিকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখন বাড়ছে না। তিনি বলেন, যেহেতু খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই আপাতত দাম বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে না সরকার। পরবর্তী সময়ে যদি এ ধরনের কোনো প্রভাব পড়ে, তখন দেখা যাবে। যদি দাম বাড়ানোও হয়, তা হবে খুব সামান্য। এদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়া, অব্যাহত লোডশেডিংসহ বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এখন দাম না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, যেকোনো সার্ভিসের মান যখন খুব খারাপ থাকে, সে সময়ে মূল্যবৃদ্ধি জনগণের ওপর বেশ আঘাত করে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন, সংকট কাটাতে ইতোমধ্যে লোডশেডিংয়ের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পর্যায়ে এসে আমি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যৌক্তিক মনে করি না।অপরদিকে গ্রিড বিপর্যয়ের পর ওলটপালট হয়ে যাওয়া লোডশেডিং সূচি নিয়ে বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠক করে বিদ্যুৎ বিভাগ। বৈঠকে গ্রাহকদের আগে থেকেই লোডশেডিং শিডিউল জানিয়ে দিতে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়। জ্বালানি সংকটে এখনো দিনে এক হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: